প্রজননক্ষমতার সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসের সম্পর্ক আছে কি না তা নিয়ে হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের একদল বিজ্ঞানী গবেষণা করেছেন
তারা বলছেন, কিছু ভিটামিন ও খাবার প্রজননক্ষমতা ও উর্বরতার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বিশেষ করে সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করার সময় বেশি করে ফলিক অ্যাসিড, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন বি-১২ খাওয়া উচিত।
কিছু পরামর্শ
গর্ভধারণের আগে থেকেই হবু মাকে সুষম পুষ্টিকর খাদ্যে অভ্যস্ত হওয়া উচিত।
গবেষকগণ বলেছেন- হবু মায়েরা তাদের নিয়মিত ডায়েটের পরিবর্তে ফার্টিলিটি ডায়েট অনুসরণ করলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা ৮০% বেড়ে যায়। কেননা সন্তান ধারণকালে ও প্রসবকালীন হবু মায়ের প্রচুর পরিমাণ আয়রন, ক্যালসিয়াম, আয়োডিন ও আমিষের চাহিদা তৈরি হবে।
অতিরিক্ত ওজন বন্ধ্যাত্বের জন্য কেবল দায়ী তাই নয়, এটি গর্ভকালীন জটিলতাগুলোও বাড়িয়ে দেয়।
তাই সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করার আগেই বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলে সঠিক ওজনে নিয়ে আসা জরুরি।
সন্তান ধারণের আগে খাবারে আমিষের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। উদ্ভিজ্জ প্রোটিন বেশি ভালো।
তাই ডাল ও বীজ-জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে।
এ ছাড়া সঠিক পরিমাণে প্রাণিজ প্রোটিনও গ্রহণ করতে হবে। সেক্স হরমোন তৈরিতে প্রাণিজ প্রোটিনের ভূমিকা আছে।
মাছ, মুরগি, চর্বিবিহীন মাংস, ডিম প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থাকতে হবে।
গর্ভস্থ শিশুর নানা ধরনের ত্রুটি এড়াতে গর্ভধারণের আগে থেকেই হবু মাকে প্রচুর ফলিক অ্যাসিড খেতে বলা হয়।
বরবটি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, গাজর, শিম, মটরশুঁটি, লেবু, পাটশাক, পুঁইশাক ইত্যাদিতে আছে ফলিক অ্যাসিড। সরিষা, সূর্যমুখীর বীজ, লাল চাল ও লাল আটায়ও আছে
প্রজননক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডও গুরুত্বপূর্ণ। স্যামন মাছ, টুনা মাছ, সামুদ্রিক মাছ, বাদাম ও মাছের তেলেও পাবেন ওমেগা ৩।
সন্তান নেয়ার ক্ষেত্রে পুরুষের স্পার্মের (বীর্য) সংখ্যা বৃদ্ধি ও গুণগত মান বাড়াতে জিংকের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ।
এ সময় নিজে এবং স্বামীকে দুধ, দুগ্ধজাত খাবার, মটরশুঁটি, কুমড়ার বিচি, মাশরুম, পালংশাক, স্ট্রবেরি ইত্যাদি জিংকের ভালো।
সন্তান ধারণ ও স্তন্যপানের সময় প্রচুর ক্যালসিয়াম ও আয়রন দরকার হবে মায়ের।
ক্যালসিয়ামের উৎস হিসেবে দুধ, দই, পনির, কাঁটাযুক্ত ছোট মাছ খেতে হবে
ভালো আয়রন পেতে মাংস, খেজুর, কিশমিশ, বেদানা, কলা, কচুশাক খাওয়া দরকার।
আবার আয়রন শোষণের জন্য ভিটামিন সি অবশ্যই খেতে হবে। এটি পাওয়া যাবে লেবু, আমলকী, কমলা, মালটা, জামে।
কোমল পানীয়, কৃত্রিম রং ও গন্ধযুক্ত জুস বা পানীয় এবং নানা ধরনের ফাস্ট ফুডে কেমিক্যাল ও ট্রান্স ফ্যাট থাকে, যা গর্ভধারণকালে বেশি খাওয়া ঠিক নয়।
0 Comments